টেক্সট নেক – নিজের অগোচরেই কি আক্রান্ত হচ্ছেন?
টেক্সট নেক একটি নব উদ্ভাবিত মেডিকেল টার্ম। সেল ফোন, ট্যাবলেট, কিংবা হাতে ধরে রেখে ব্যবহার করতে হয় এমন অন্যান্য ডিভাইসগুলিকে খুব ঘন ঘন এবং খুব দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যবহার করতে থাকলে ঘাড়ের যে পজিশন হয় সেটাকে টেক্সট নেক বলা হয়। এটি থেকে যে ব্যথার সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় টেক্সট নেক পেইন। এটি এখন প্রায় সকল বয়সের মানুষের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এক গবেষণায় দেখে গেছে, শিশু এবং কিশোরেরা পড়াশোনা কিংবা হাতে ধরে চালাতে হয় এমন ইলেকট্রনিক কোন ডিভাইস ব্যবহারের দরুন একই অবস্থানে স্থির থেকে দৈনিক গড়ে ৫ থেকে ৭ ঘন্টা এবং বছরে প্রায় ১,৮২৫ থেকে ২,৫৫৫ ঘন্টা সময় ব্যয় করে।
টেক্সট নেকের কারণে যেসব সমস্যা হতে পারে :
১. ঘাড় ও কাঁধে তীব্র ব্যথা এবং ঘাড় ও কাঁধের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া।
২. মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, চোখে ঝাপসা দেখা।
৩. ঘাড় থেকে ব্যথা হাতের দিকে যাওয়া। হাত ও আঙুল অবশ ও ভারী অনুভূত হওয়া।
৪. মেরুদণ্ড ক্ষয় হওয়া, মেরুদণ্ডের আকৃতির পরিবর্তন এবং মেরুদণ্ডের ডিস্ক সরে যাওয়া। অল্প বয়সে পিঠব্যথা, কোমরব্যথা হওয়া। মাংসপেশি ও নার্ভ ছিঁড়ে যাওয়া।
টেক্সট নেক সমস্যা থেকে বাঁচতে করণীয় :
১. সোজা হয়ে সঠিক অবস্থানে বসে ঘাড় ও মাথা সামনের দিকে না ঝুঁকে কাজ করা।
২. দীর্ঘক্ষন একই ধরনের অবস্থানে না থাকা।
৩. দীর্ঘ সময় কোন ইলেকট্রনিক ডিভাইস হাতে নিয়ে একই অবস্থানে স্থির না থাকা
৪. দীর্ঘ সময়ে একই অবস্থানে থেকে কোন ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুক্ষণ পর পর বিরতি নেয়া
৫. ইলেকট্রিক ডিভাইসকে যথাসম্ভব আই-লেভেলে রেখে ব্যবহারের চেষ্টা করা।
৬. মোবাইল/ট্যাব/হাতে ধরে ব্যবহার করতে হয় এমন ডিভাইস ব্যবহারের সময়কাল যথাসম্ভব কমিয়ে আনা।
৬. মাথা এবং ঘাড়ের নমনীয়তা বৃদ্ধির জন্য ব্যায়াম করা।
পৃথিবী যত সামনে আগাবে প্রযুক্তি হয়ে উঠবে তত জীবনঘনিষ্ঠ। তবে অবশ্যই মনে রাখতে হবে এসব প্রযুক্তি আমাদের যতটা উপকার করছে তাঁর চেয়ে বেশি ক্ষতির শিকার যেন আমরা না হই। উপরের পরামর্শগুলো এক্ষেত্রে কিছুটা হলেও কাজে লাগবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
কেউ যদি এই সমস্যা ইতোমধ্যে অনুভব করে থাকেন তবে দ্রুত অর্থোপেডিক্স অথবা ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ অবশ্যই উত্তম।
আরো পড়ুনঃ নাক থেকে রক্তপাত এর কারন ও করনীয়